আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্যসেবার প্রাক্তন ডিজি | তার সেবার গল্প-হালিশহর সংবাদ
২০১৬ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে রয়েছেন ডাক্তার আজাদ, চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চুক্তিতে নিয়োজিত ছিলেন তিনি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার আগে ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এর দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৮৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার আবুল কালাম আজাদ ২০০১ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের পরিচালক এবং অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
করোনা চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনা ও অধিদপ্তরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সমালোচনার মুখে ছিলেন তিনি, অবশেষে নানা সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ।
ইতি মধ্যে আবুল কালাম আজাদকে সরিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো, এবং তার চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো,
এইটা বুঝতে চতুর আবুল কালাম আজাদ নিজেই পদত্যাগ করে গা বাঁচালেন, তিনি শুরু থেকে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন ও দুর্নীতিবাজদের তার সুসম্পর্ক আছে বলে নানা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে ।
করোনা নিয়ে অধিদপ্তরের কাজে সমন্বয়হীনতা আগে থেকে থাকলেও সেইটা প্রকাশে আসে সম্প্রতি ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন পাওয়া রিজেন্ট হাসপাতাল এবং নমুনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেকেজের নজিরবিহীন দুর্নীতি অনিয়ম ও প্রতারণার পর ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ প্রায় তিন মাস আগে বলেছিলেন সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মনে করে গরম আবহাওয়ার ও আদ্রতার কারণে কভিড-১৯ বাংলাদেশে প্রচণ্ডতা দেখা দেবেনা,এই পরিস্থিতিতে ২৯ মার্চ এর বক্তব্য থেকে সরে এসে গত ১৮ জুন তিনি করোনা পরিস্থিতি
নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো, তথ্য নিয়ে হাজির হন,ওইদিনের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে তিনি বলেছিলেন করোনার পরিস্থিতি এক দুই বা তিন মাসের শেষ হচ্ছেনা, এটি দুই থেকে তিন বছর বা তার চেয়ে বেশী দিন স্থায়ী হতে পারে, কিন্তু তার এই বক্তব্যের জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে অনেকেই তার অপসারণ দাবি করেন,
আবুল কালাম আজাদের বক্তব্য সরকারের বিব্রত করে।
পরের দিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাপরিচালকের দায়িত্ব জ্ঞানহীন আখ্যা দিয়ে তাকে ওই ধরনের বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান, এর মধ্য দিয়ে নিজের উপর সরকারের হাইকমান্ডের ক্ষবের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে, পরে দিন এই ডিজি গণমাধ্যমে বিবৃতি দুঃখ প্রকাশ করলেও আগের দিনের বক্তব্য থেকে সরে আসেননি।
এইপর তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞরা ও তার অপসারণ চাছিলেন,
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে ব্যর্থতার পাশাপাশি কেনাকাটা সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতির সামাল দিতে না পারা সহ নানা
অব্যবস্থাপনার দায়ে ডাঃ আবুল কালাম আজাদকে সরিয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করেছিল সরকারের হাইকমান্ড।
তার স্থানে মহাপরিচালক পদে একজন সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে খোঁজা হচ্ছিল, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ শুরু করেছিলেন এজন্য, কয়েক জনের তালিকা ও তৈরি করা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত মহামারী নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ এ ডিজিই নেতৃত্বে জনস্বাস্থ্যের ওপর আস্থা রেখেছিলেন, এবং সংক্রামক ব্যাধি আইনেও এই বিষয় টি উল্লেখ রয়েছে, কিন্তু একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে তিনি সারাদেশের মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন।
হালিশহর সংবাদ এ আরও পড়ুন:
ডাঃ আবুল কালাম আজাদের আগ্রহে জেকেজি কে করোনা নমুনা সংগ্রহের কাজে যুক্ত করা হয় অথচ অনুমোদন দেওয়ার আগে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সরেজমিন ডিজি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সেই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনের সমালোচনা করে অনেকে বলেছেন, করোনা সংক্রমণ এর পর আজ পর্যন্ত কোন হাসপাতাল পরিদর্শনে যাননি ডিজি অথচ করোনায় অর্ধশতাধিক চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় শোক বার্তায় ও দেননি তিনি, এছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে মাস্ক গ্লাভস পিপি বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকে বদলি এবং মুদ্ধা মেডিকেলের পরিচালকে ওএসডি করা হয়েছিল, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ডাঃ আবুল কালাম আজাদকে দুই দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের নজিরবিহীনভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযান পরিচালনা করেন এবং আবুল কালাম আজাদকে রুদ্ধদ্বার কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করেন, স্বাস্থ্যের ডিজি পদত্যাগের খবর প্রকাশিত হওয়ার পরপরই চিকিৎসকদের মধ্যে আনন্দ
উল্লাস দেখা যায়, বিশেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যারা আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তারাও খুব খুশি, চিকিৎসকরা জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্যখ্যাত রাহুমুক্ত হলো কালাম আজাদের কারণেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একের পর এক অপকর্ম হচ্ছিল বলে চিকিৎসকরা মনে করেন এই পদত্যাগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নতুন উদ্যোমে কাজ করতে পারবে। করোনা মোকাবেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে নির্দেশনা তা বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
হালিশহর সংবাদ এ আরও পড়ুন:
Leave a Reply