নিজের কথা-জাহানারা বুলা।
চা পান বা কফি পান, আমার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিলাসিতা। কারণ, কদাচিৎ ই আমি চা, কফি পান করে থাকি। আর, চা বা কফি বানানোর সময়টাও আমার জন্য একটি শ্রেষ্ঠ সময়।
অন্যের জন্যে চা, কফি বানাতে আমার ভীষণ বিরক্ত লাগে। কারণ, এই কোয়ালিটি টাইমটা অন্যের জন্যে ব্যয় করতে আমার মোটেই ভালো লাগে না।
আমি যেদিন খুব রোমান্টিক মুডে থাকি বা থাকতে চাই, সেদিন আমি চা, কফি বানাতে যাই। আর, প্রায়শই এই কাজটি আমার দু’তিন বার করতে হয় এট এ টাইম! আজ এই নিয়ে তৃতীয় বার চা বানালাম। নিখুঁত সৃজনশীলতার এই এক বিড়ম্বনা। হবে নাইবা কেন? খুব কম দিনই যে আমার বানানো চা বা কফি পানীয় হয়ে ওঠে!
মানুষ শুনলে অবাক হবে। ভাববে, এ কেমন কথা! সত্যি, আমি সত্যি বলছি, অপাংতেয় সেই পানীয়। আমার যেহেতু এই পানীয়র উপর নির্ভশীলতা নেই, তাই এটাকে বানাতে যাই সুস্বাদু করে। অনেকটা ডেজার্টের মতই। অভ্যাস বসত পানের অনেক ঊর্ধ্বে।
আমার ডায়বেটিস। মিষ্টি খাওয়া নিষেধ। আমার বাড়ী এখন আর মিষ্টি আসে না অতিথীরা যদি নিয়ে না আসেন। অথচ, একটা ফ্রিজ আমার মিষ্টি, চকলেট, কয়েক রকম হালুয়া, পায়েস এসবের জন্যেই বরাদ্দ ছিলো। ফ্রিজটি এখন হাহাকার করে কাঁদে। এই কারণেই, আত্মপ্রবঞ্চনা করে আমি চা কফিকে ডেজার্টের লিস্টে রেখেছি!
খুব করে দুধ, চিনি বা দুধ, মধু, বা আদা, দুধ, চিনি বা মধু দিয়ে আমি চা করে খাই। কফিতে আদাটা বাদ। আর সব এক।
এখানে সময়টাকে কোয়ালিটি সময় আমি আরো ধরি এই জন্য যে, ক্যাফিন আমাকে সাংঘাতিক ভাবে আকড়ে ধরে। একদিন পেটে গেলে প্রায় দেড়দিন ঘুম নেই। ঘুম সেক্রিফাইস করে যা কিছু করি তাই আমার কাছে মূল্যবান।
কবিতা লিখাও এই পর্যায়ের ই বিলাসিতা আমার। সংসার থেকে সময় চুরি করে, ঘুমকে বেদনা দিয়ে আমি কবিতা লিখি। জানিনা কি অখাদ্য কুখাদ্য লিখি, তবে লিখি তো! সাহিত্যের এই টুকু সেবাও আমার জন্য অনেক। সারে সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কারের উপর যাকাত ধার্য্য হওয়ার মত।
আজ আমার মন ভালো। তাই, এত বেহুদা কথা। তবে, মন ভালোর কারণ আছে।
পরে বলি?
৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ঢাকা।
Leave a Reply