জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত ও উপকারিতা
জামায়াতের সহিত নামাজ পড়া হইলে সেই নামাজের মর্তবা অনেক বাড়িয়া যায়।
কোন কোন হাদিসে আছে যে, জামায়াতের নামাজে ২৫ গুণ বেশি সাওয়াব হয়, আবার কোন কোন হাদিসে ২৭ গুণ সাওয়াবের কথা উল্লেখ রহিয়াছে।
যেমন হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হযরত আঁ-হযরত (দঃ) বলেনঃ- জামায়াতের নামাজ একাকীর নামাজ হইতে ২৭ গুণ বেশি উত্তম।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, হযরত রাসূলুল্লাহ (দঃ) বলিয়াছেনঃ
যে নামাজ জামাতে পড়া হয়, উহা ঘরে অথবা বাজারে (দোকান ঘরে একাকী) পড়া নামাজ অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি ফজিলত রাখে। কেননা, মানুষ যখন উত্তমরূপে ওযু করতঃ কেবলমাত্র নামাজ পড়ার নিয়তে মসজিদের দিকে গমন করে, তখন তাহার প্রতিটি পদক্ষেপে নেকীর দিক হইতে তাহার একটি করিয়া স্তর বৃদ্ধি করা হয় এবং তাহার একটি করিয়া গুনাহ্ মাফ করিয়া দেওয়া হয়। অতঃপর নামাজানতে সে যতক্ষণ পর্যন্ত বা অজু অবস্থায় নিজের নামাজের স্থানে বসিয়া থাকে, ততক্ষণ ফেরেশতাগণ তাহার জন্য মাগফেরাত ও রহমত লাভের দোয়া করিয়া থাকেন। আর সে মসজিদে পৌছিয়া যতক্ষণ জামায়াতে নামাজ পড়ার জন্য অপেক্ষা করিতে থাকে, ততক্ষণ নামাজের সাওয়াব পাইতে থাকে। (বোখারী)
উপরোক্ত দুটি হাদিসে প্রথম টিতে ২৭ গুণ এবং দ্বিতীয়টিতে ২৫ গুণ সাওয়াবের কথা উল্লেখ রহিয়াছে। সাওয়াবের এই পার্থক্য সম্পর্কে ওলামায়ে কেরামগণ অনেকে অনেক যুক্তি প্রদর্শন করিয়াছেন। তন্মধ্যে একটি যুক্তি এই যে, ‘ইখলাছ’ অর্থাৎ, আন্তরিকতার তারতম্যের কারণে সাওয়াবের পার্থক্য হইয়া থাকে। কেহ কেহ বলেন, সাধারণতঃ জামায়াতের সাওয়াব ২৫ গুণই, তবে এশার ও ফজর নামাজের জামায়াতে শামিল হওয়া অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছুটা বেশী কষ্টকর বলিয়া সেই দুই ওয়াক্ত নামাজের জামায়াতে যোগদানকারীর জন্য দুই গুণ বেশী সাওয়াব রাখা হইয়াছে।
হাদিস ব্যাখ্যাকারীদের মধ্যে কেহ কেহ বলেন, প্রথম হাদীসে ২৭ গুণের কথা বলা হইয়াছে কিন্তু দ্বিতীয় হাদিসে ২৫ গুণ বলা হয় নাই, বরং ২৫ ডবল বলা হইয়াছে, অর্থাৎ একাকী নামাজ পড়িলে যে সওয়াব পাওয়া যায় উহাকে ২৫বার দ্বিগুণ করিলে যাহা হয় জামায়াতের নামাজে ততগুণ সওয়াব হাসিল হয়। যেমন একাকী নামাজে সাওয়াব এক গুণ।
নামাজের প্রতিদান দেওয়াটা আল্লাহ তায়ালার পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়। কোনও নামাজী বান্দার আন্তরিকতায় সন্তুষ্ট হইয়া তিনি যদি তাহাকে লক্ষগুণ সাওয়াব দান করেন, তাহাতে কি তাহার কোষাগারে অকুলান পড়িবে?
লেখাটির সূত্রঃ-
মাওলানা মোহাম্মদ আজিজুল হক
সাহেবের লেখা,
মকসুদুল মোমেনিন বা বেহেশতের সম্বল, বইটির প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ড একত্রে থেকে।
Leave a Reply