গােসলের কয়েকটি মাসয়ালা | জেনেনিন গােসলের মাসয়ালা সমূহ- হালিশহর নিউজ
* যতবার ইচ্ছা সঙ্গম করিয়া অথবা একাধিক স্ত্রীর সহিত সঙ্গম করিয়া একবার গােসল করিলেই যথেষ্ট হইবে। প্রত্যেক স্ত্রীর সহিত প্রতিবার সঙ্গমের পর গােসল করা ফরজ নয়।
* সঙ্গমান্তে না ঘুমাইয়া অথবা প্রস্রাস না করিয়া অথবা অন্ততঃ চরিশ কদম হাটাহাটি না করিয়াই গােসল করতঃ নামাজ পড়িল। ইহার পর সামান্য কিছু বীর্য-যাহা সঙ্গমকালে স্বীয় স্থান হইতে স্খলিত হইয়াছিল, কিন্তু নির্গত হইয়া সরেনাই- বাহির হইলে পুনরায় গােসল করিতে হইবে, তবে ঐ নামাজ পুনরায় পড়িতে হইবে না।
আর যদি সঙ্গমান্তে প্রস্রাব করার অথবা ঘুমাইবার অথবা অন্ততঃ চল্লিশ কদম হাটাহাটি করিবার পর গােসল করতঃ নামাজ পড়ে, তারপর বীর্য নির্গত হয়, তাহা হইলে গােসল কিম্বা নামাজ কোনটাই দোহরাইতে হইবে না। অবশ্য যদি পুরুষাঙ্গ উত্তেজিত ও দণ্ডায়মান অবস্থায় বীর্য নির্গত হয়, তাহা হইলে গােসল করিতে হইবে।
* স্ত্রী গােসল শেষ করিবার পর তাহার গুপ্তস্থান হইতে বীর্য বাহির হইলে এবং তাহার নিজের বীর্য বলিয়া বিশ্বাস হইলে তাহার পুনরায় গােসল করিতে হইবে। আর স্বামীর বীর্য বলিয়া বিশ্বাস হইলে তাহার গােসল করিতে হইবে না, কেবল ওজু করিলেই চলিবে।
* স্বপ্নদোষের কথা মনে নাই, তবে কাপড়ে বা বিছানায় দাগ দেখা যায় । এইক্ষেত্রে যদি উহা ‘মণি’ বলিয়া বিশ্বাস হয়, তবে গােসল করিতে হইবে। আর মণি কিনা, সন্দেহ হইলে যদি শুইবার কালে লিঙ্গ উত্তেজিত থাকিয়া থাকে, তবে উহাকে মজি ধরিতে হইবে এবং এই অবস্থায় গােসল করিতে হইবে না। অন্যথায় গােসল করা ফরজ হইবে।
* স্বামী-স্ত্রী একই বিছানায় শয়ন করিল। ঘুম হইতে জাগিয়া দেখিল-বিছানায় বীর্যের দাগ পড়িয়া রহিয়াছে। কিন্তু স্বপ্নদোষের কথা স্বামী কিম্বা স্ত্রী কাহারও মনে নাই। এই ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েরই গােসল করা কর্তব্য। কেননা, বীর্য স্বামী কিম্বা স্ত্রীর-তাহা সঠিক রূপে বলা যায় না ।
* ফরজ গােসল শেষ করার পূর্বে কোন কিছু পানাহার করিতে ইচ্ছা করিলে, হাত-মুখ ধৌত করিয়া এবং কুলি করিয়া লওয়া উত্তম। হাত-মুখ না ধৌত করিয়া যদি কোন কিছু পানাহার করে, তাহাতেও গুনাহ হইবে না।
* নাবালেগা বালিকার সহিত সাবালক পুরুষ সঙ্গম করিলে, যদিও নাবালেগার গােসল করা ফরজ নয়, তথাপি গােসলের অভ্যাস গড়িয়া তােলার জন্য এই ক্ষেত্রেও তাহার গােসল করা উচিত।
* যদি এমন কোন রােগে আক্রান্ত হয় যাহার ফলে ফরজ গােসলের সময় মস্তকে পানি ডালিতে গেলে পীড়া বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের হানি হওয়ার আশংকা থাকে, তাহা হইলে মস্তক বাদ দিয়া অবশিষ্ট সারা শরীরে পানি বাহাইয়া দিলে গােসল শুদ্ধ হইয়া যাইবে। তদ্রুপ, শরীরের যে কোন স্থানে ক্ষত, বা পট্রি থাকার কারণে পানি বাহান ক্ষতিকর হইলে ঐ টুকু স্থান বাদ দিয়া বাকী সমস্ত শরীর ধৌত করিতে হইবে। ঐ স্থানটুকু মাসেহ করিয়া ফেলিবে।
* গােসল করার সময় এমনভাবে সারা শরীরে পানি পৌছাইবে যেন এক চুল পরিমাণ জায়গাও ভিজার বাকী না থাকে। চুল পরিমাণ স্থানও শুকনা থাকিয়া গেলে গােসল শুদ্ধ হইবে না। গােসল শেষ করিয়া আসার পর দেখা গেল- চুল পরিমাণ সামান্য জায়গা শুকনা রহিয়া গিয়াছে; তখন শুধু ঐ শুকনা জায়গাটুকু ধৌত করলেই গােসল পুরা হইয়া যাইবে। পুনরায় গােসল করিতে হইবে না ।
* গােসল করিয়া আসার পর মনে পড়িল যে, ভুল বশতঃ কুলি করা কিম্বা নাকে পানি দেওয়া হয় নাই । তখন কুলি করিয়া বা নাকে পানি দিয়া লইলেই গােসল পুরা হইয়া যাইবে। পুনরায় গােসল করিতে হইবে না।
* গােসলের পর দেখা গেল-চুন, আটা বা আঠা জাতীয় কোনকিছু হাতে, নখে কিম্বা অন্য কোন স্থানে লাগিয়া থাকায় গােসলের সময় সেই স্থানে পানি পৌছে নাই তখন ঐ স্থানে আঠা খোঁচাইয়া বা অন্য যেভাবে সম্ভব-পরিষ্কার করিয়া তারপর ঐ স্থানটুকু ধৌত করিয়া লইবে। পুনরায় গােসল করিতে হইবে না।
উপরােক্ত সকল ক্ষেত্রে গােসল করার পর গােসলের ত্রুটি ধরা পড়ায় ঐ শুকনা অংশ ধৌত করার মধ্যবর্তী সময়ে কোন নামাজ পড়িয়া থাকিলে তাহা দোহরাইতে হইবে ।
* স্ত্রীলােকের মাথায় খোপ বাধা থাকিলে এমনভাবে পানি ঢালিবে যেন সমস্ত চুলের গােড়ায় পানি পৌছিয়া যায় । খোপা বাঁধা রাখিয়া চুলের গােড়ায় পানি পৌছান সম্ভব না হইলে খোপা খুলিতেই হইবে। চুল খােলা থাকিলে চুলের আগা-গােড়া সবটুকু বিজাইতে হইবে ।
* হাতের আংটি, নাকের নথ, কানের বালি বাজুতে বাঁধা তাবিজ ইত্যাদির সাথে সংযুক্ত অঙ্গেভারূপে পানি পৌছাইতে হইবে। অন্যথায় গােসল হইবে না।
*পুকুর বা নদীতে ডুবাইয়া অথবা বৃষ্টিতে ভিজিয়া আসিলে তৎসঙ্গে যদি কুলি করিয়া এবং নাকে পানি দিয়া থাকে, তাহাতেই গােসল হইয়া যাইবে।
* নারী দর্শনে বা আলিঙ্গনে অথবা যৌন-আবেদনমূলক ছায়াছবি দেখার বা যৌন গ্রন্থাদি পাঠ করার ফলে মনে কামভাব জাগিতে অথবা সঙ্গমকালে পূর্ণ উত্তেজনায় পূর্বে জননেন্দ্রিয় বাহিয়া যে আঠাযুক্ত তরল পদার্থ বাহির হয়, উহাকে ‘মজি’ বলে। শুধু ‘মজি’ বাহির হইলে গােসল ফরজ হয় না, তবে ওজু ভঙ্গ হইয়া যায় ।
আর সমঙ্গমকালে অথবা অন্য যে-কোন অবস্থায় শাহ্ওয়াত’ বা পূর্ণ কামােত্তেজনার সহিত লিঙ্গ পথে যে গাঢ় বীর্য বাহির হয়, উহাকে ‘মনি’ বলে। মনি বাহির হইলে গােসল ফরজ হয়।
সঙ্গমান্তে বা অপর কোন উপায়ে মনি বাহির হওয়ার পর-লিঙ্গ হইতে যে লালাবৎ তরল পদার্থ বাহির হয়, উহাকে ‘ওদি’ বলে। মনি আর মজির মধ্যে পার্থক্য হইল- মজি দুর্গন্ধহীন স্বচ্ছ আঠাযুক্ত তরল পদার্থ, আর মনি দুর্গন্ধযুক্ত গাঢ় ধাতু। মজি চরম উত্তেজনার পূর্বাভাস। মজি বাহির হওয়ার পর উত্তেজনা শিথিল হইয়া পড়ে, মনে তৃপ্তির ভাব জাগে।
* ধাতু দৌর্বল্য, প্রমেহ কোষ্ঠকাটিন্য ইত্যাদি কারণে বা মলত্যাগ করিতে বসিয়া কোথ দিলে যদি বিনা উত্তেজনায় মনি বাহির হয়, তবে গােসল ফরজ হইবে না।
গােসল করিবার নিয়ম কি? জেনেনিন গােসলের নিয়ম সমূহ- হালিশহর নিউজ
গােসলে মুস্তাহাব কয়টি ও কি কি? জেনেনিন গােসলের মুস্তাহাব সমূহ- হালিশহর নিউজ
গােসলে সুন্নত কয়টি ও কি কি? জেনেনিন গােসলের সুন্নত সমূহ- হালিশহর নিউজ
গােসলে ফরজ কয়টি ও কি কি? জেনেনিন গােসলের ফরজ সমূহ- হালিশহর নিউজ
মুস্তাহাব গােসল কি? | কেনো মুস্তাহাব গােসল করতে হবে? জেনেনিন-
সুন্নত গােসল কি? | কেনো সুন্নত গােসল করতে হবে? জেনেনিন- হালিশহর নিউজ
ওয়াজেব গােসল কি? | কেনো ওয়াজেব গােসল করতে হবে? জেনেনিন- হালিশহর নিউজ
গােসল চারি প্রকার – হালিশহর নিউজ
ফরজ গােসল কি? | কেনো ফরজ গোসল করতে হবে? জেনেনিন- হালিশহর নিউজ
ওযুর গুরুত্ব ও ওজুর ফজিলত | হালিশহর নিউজ
ওজুতে সুন্নত্ কি কি? জেনেনিন ওযুর সুন্নাত সমূহ | হালিশহর নিউজ
ওজুতে মাকরুহ্ কি কি? ওযুর মাকরুহ্ – হালিশহর নিউজ
ওজু করিবার নিয়ম | ওযু করার নিয়ম জেনেনিন- হালিশহর নিউজ
ওজুতে মুস্তাহাব কি কি? জেনেনিন ওযুর মুস্তাহাব- হালিশহর নিউজ
কি কি কারণে ওজু ভঙ্গ হয়? ওযু ভঙ্গের কারণ সমূহ- হালিশহর নিউজ
Leave a Reply