সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা: কেন ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান?
সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালার সূচনা ২০১১ খ্রি.। সন্দ্বীপেরই কিছু সংখ্যক লোকের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নেবুলা প্রপার্টিজ লি. এর বার্ষিক সভায় এর প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয় সন্দ্বীপের সর্বস্তরের, সকল মতের লোকদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে। সন্দ্বীপের অর্ধ সহস্রাধিক লোকের আর্থিক অংশগ্রহণে প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত এর কার্যক্রম শুরু হয় এবং বর্তমানে ১০ম শিক্ষাবর্ষ অতিক্রম করছে। বিভিন্ন কারণে স্কুলটি বহুল আলোচিত এবং দেশে-বিদেশে সন্দ্বীপবাসীদের কাছে অতি পরিচিত এক নাম। এ নামটি এত বেশি পরিচিতি অর্জন করেছে যে, এর পাশে পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত সন্দ্বীপ মেডিক্যাল সেন্টার সাধারণ লোকদের কাছে আনন্দ পাঠশালা মেডিক্যাল নামে পরিচিতি লাভ করেছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ধনী ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতায় এর চেয়েও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কিন্তু কোন একটি এলাকার এতগুলো মানুষ নিজ এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে এ ধরনের কোন উদ্যোগ নিয়েছে কোন এলাকায় তার দৃষ্টান্ত আছে কি? সম্ভবত নেই। তাহলে প্রতিষ্ঠার দিক থেকে সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা ব্যতিক্রমী নয় কি?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে কোন ভালো উদ্যোগ বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবচেয়ে কার্যকর গ্রুপ হচ্ছে শিক্ষকমণ্ডলী। সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল, লিখিত, মৌখিক এবং সর্বশেষ অনুশীলন ক্লাসের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দান করে থাকে। নিয়োগের পর থেকে একজন শিক্ষক পাঠ পরিকল্পনা, উপস্থাপনাসহ সার্বিক ব্যাপারে দিকনির্দেশনা এবং হাতে কলমে সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। সংশ্লিষ্ট ক্লাসের শিক্ষার্থী এবং সকল শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের উপস্থিতিতে একজন শিক্ষক ক্লাস নেয়ার পর শিক্ষার্থীদের বিদায় দিয়ে ঐ ক্লাসের উপর বিচার বিশ্লেষণ চলতে থাকেে।একে ‘আদর্শ পাঠ’ বলা হয়। সম্ভবত একজন শিক্ষক নিজেকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি খুবই কার্যকর পদ্ধতি। একজনের ক্লাস থেকে সবাই শিক্ষা নিতে পারেন। বিশিষ্ট এবং কৃতী শিক্ষাবিদ সন্দ্বীপ-সন্তানগণ যখন সন্দ্বীপ আসেন, সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করে তাঁদের সাথে সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালার শিক্ষকদের সাক্ষাৎ করানোর। সন্দ্বীপের বাইরের এমনকি বিদেশি কাউকে পেলেও এ সুযোগটা সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা কাজে লাগিয়ে থাকে। কলেজ, বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, বুয়েটের শিক্ষার্থীদের পেলে চেষ্টা করা হয় শিক্ষার্থীদের সাথে ক্লাসে পরিচিতি করানোর, ক্লাস পরিচালনা করতে দেয়ার। উপরের এ সুযোগ কি সব প্রতিষ্ঠানে অবারিত রয়েছে? সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘টিচার অ্যাসিস্ট্যান্স গ্রুপ’ গঠন করা হয়েছে।
একজন ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা করতে চাইলে প্রথমে তাকে রোগীর হিস্ট্রি শুনতে হয়, গভীর মনোযোগ সহকারে, প্রয়োজন মনে করলে কিছু টেস্টও করিয়ে নেন। অন্যথায় চিকিৎসা যথাযথ যথাযথ নাও হতে পারে। সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা শিক্ষার্থী, তার পরিবার, পিতামাতার শিক্ষাগত অবস্থা, বাসায় পড়াশোনার পরিবেশ, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যাবলী, রক্তের গ্রুপ, উচ্চতা, ওজন, তার মধ্যে বিদ্যমান সম্ভাবনা এবং সমস্যাসমূহ সবই সংগ্রহ করার চেষ্টা করে এবং পাক্ষিক পর্যালোচনা বৈঠকে ভালো, মধ্যম এবং দূর্বল এ তিনভাগে শিক্ষার্থীদের চুলচেরা বিশ্লেষণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পূর্বে গৃহীত পদক্ষেপের পর্যালোচনা করা হয়। শিক্ষার্থীদের নিয়ে এসব উদ্যোগ কোথায় কোথায় আছে?
এখন চলছে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষণের যুগ। শিক্ষক এখন আর জলমগ পদ্ধতির একক বক্তা নন। তিনি বুঝিয়ে দিয়ে দলীয় কাজের মাধ্যমে এবং নানা কৌশল প্রয়োগ করে সবার বোধগম্য করা এবং তা আদায়ের ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। ভারত, জাপান, কানাডা ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উপর ডাউনলোড করা তথ্যাবলী শিক্ষকদের প্রদান করা হয় এবং সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালায় কী কী বিষয় বা কৌশল চালু করা যায় তা লিখিতভাবে মতামত নিয়ে গ্রুপ আলোচনার মাধ্যমে উপসংহারে পৌঁছানোর ব্যবস্থা থাকে। এসব আয়োজন কি সব প্রতিষ্ঠানে থাকে?
একেক গ্রুপের সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম একেকদিন। সংগীত, আবৃত্তি, ছড়াপাঠ, বক্তৃতা, বিতর্ক ইত্যাদির পাশাপাশি সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা ক্ষুদে শিক্ষক তৈরির কাজও ভালোভাবে করে থাকে। পূর্বেই একজন শিক্ষার্থীকে নিচের যে কোন ক্লাসের পড়ানোর টপিক দিয়ে দেয়া হয়। ঐ শিক্ষার্থী প্রস্তুতি নিয়ে আসে। পরবর্তীদিন সে ক্লাস নিয়ে থাকে। বিশেষ কোন কারণে কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে বা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বা জরুরি কোন সভা থাকলে ক্ষুদে শিক্ষকরা সে সংকট সহজেই মোকাবেলা করতে পারে। এ পদ্ধতিতে নিঃসন্দেহে ক্ষুদে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয় পক্ষই লাভবান হয়ে থাকে। ভবিষ্যতে ভালো শিক্ষক হওয়ার আত্মবিশ্বাস লাভ করে ক্ষুদে শিক্ষকরা, আন্ডারস্ট্যান্ডিং লেভেল কাছাকাছি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বোঝার সুবিধাও বেশি হয়ে থাকে। সহপাঠ কমবেশি সবজায়গায় হয়। কিন্তু আলাদা একজন শিক্ষক এবং আলাদা একটি কমিটি করে দিয়ে বাস্তবায়নের সুযোগ সবার নেই।
মানসম্মত এবং পরিকল্পিত শিক্ষাদানের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় শিক্ষাপোকরণ সংগ্রহে থাকা জরুরি। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, মোবাইল প্রজেক্টর, প্রতিনিয়ত ডাউনলোড করা ডিজিটাল কনটেন্ট এবং এছাড়াও রয়েছে নানা ধরনের শিক্ষাপোকরণ। প্রতিদিনের ক্লাসের পাঠপরিকল্পনার শিট প্রতিষ্ঠানই সরবরাহ করে থাকে। প্রতিদিনের ক্লাস যথার্থভাবে হচ্ছে কিনা তা তদারকির ব্যবস্থা প্রধান শিক্ষকগণ (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) এবং পরিচালনা পরিষদের উপস্থিত সদস্যবৃন্দ করে থাকেন। কোন ত্রুটিবিচ্যুতি চোখে পড়লে তা সহযোগিতার মাধ্যমে সাথে সাথে সংশোধনের চেষ্টা করা হয় বা বিষয়টি শিক্ষক টেবিলে নিয়ে আসা হয়। সমাধানে পৌঁছতে কষ্ট হলে ইন্টারনেট, মোবাইলে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সহযোগিতা নেয়া হয়।
পঞ্চম শ্রেণি থেকে উপরের দিকের শিক্ষার্থীদের মতামত লিখিতভাবে নেয়া হয় শিক্ষকদের ক্লাস পারফরম্যান্সের উপর। এতে অনেক নতুন নতুন তথ্যাদি বেরিয়ে আসে। শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ না করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে প্রয়োজনীয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় বা বিকল্প কোন উদ্যোগ নেয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে শিক্ষক এবং অভিভাবকের সমন্বিত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ খুবই জরুরি। ক্লাসে কোন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে ক্লাস শেষেই শ্রেণিশিক্ষক পাঠশালার মোবাইলে অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ করেন। মাসিক পরীক্ষার ফলাফল অভিভাবকদের কাছে পাঠানো হয়। প্রতিদিন ডায়েরিতে অভিভাবকের মন্তব্যের কলাম আছে। ক্লাসটেস্টের খাতায় অভিভাবকের স্বাক্ষরের জায়গা রয়েছে। সাময়িক পরীক্ষা বা মডেল টেস্টের পর অভিভাবক সমাবেশ হয়ে থাকে ক্লাসভিত্তিক। অভিভাবকগণ তাঁদের মতামত দিয়ে থাকেন। শিক্ষক-অভিভাবকের নিয়মিত ও প্রয়োজনীয় যোগাযোগ শিক্ষার্থীর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমকে আনন্দদায়ক করার জন্য রয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠ, মাঠের একপাশে রয়েছে দোলনা, স্লিপার এবং ঢেঁকি। ক্লাস শুরুর আগে বা বিরতিতে কেউ থাকে দোলনায়, কেউ স্লিপারে আর কেউ খেলার মাঠে ক্রিকেট বা ফুটবল নিয়ে ব্যস্ত। এক ফাঁকে গিয়ে টিফিন খেয়ে নিতে হয়। এটা সবার জন্যই বাধ্যতামূলক। মাসিক নির্দিষ্ট একটা ফি’র বিনিময়ে পাঠশালার ক্যান্টিনে তৈরি নাস্তা পরিবেশিত হয়। কখনো শিক্ষকবৃন্দ, কখনো সিনিয়র স্টুডেন্টরা পরিবেশনে সহযোগিতা করে থাকে। স্কুলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার কাজটি প্রধানত শিক্ষার্থীরাই করে থাকে। সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালার নিচু ক্লাসগুলোতে পড়া ক্লাসেই শেষ হয়ে যায়, এ কারণে বাড়িতে বেশি পড়তে হয়না। তবে উপরের দিকের ক্লাসগুলোতে ডে কেয়ারের মাধ্যমে ক্লাসের পড়া শেষ করা তথা তৈরি করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এ ছাড়া রয়েছে ছাত্রদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা। বাড়িতে মোবাইল ব্যবহার এবং অন্যান্য সমস্যা থেকে বাঁচিয়ে পড়াশোনার জন্য নিশ্চিত ঠিকানা মনে করেন ছাত্রাবাসকেই। যদিও সীমিত আসন, দাবী অনেক। এ কারণে গুরুত্ব বিবেচনা করেই ছাত্রাবাসে সিট দিতে হয়। ছাত্রাবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ছাত্রদের ফ্রেন্ড, ফিলোসপার এন্ড গাইড। মাঠে তাদের সাথে খেলে, রাতের বেলা পড়ালেখা তদারকি করে আবার মসজিদে নামাযে নেতৃত্ব দেন। নির্ধারিত রুটিন অনুযায়ী তাদেরকে রাতদিনের পুরো সময়টুকু অতিবাহিত করতে হয়। ছাত্রীনিবাসের দাবীও দিন দিন জোরদার হচ্ছে, হয়তো কাছাকাছি সময়ে সে আয়োজনও হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ।
সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা।
সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালার ব্যতিক্রমী আরেকটি আয়োজন হচ্ছে শিক্ষাগ্যালারি। একটি কক্ষে শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত প্রয়োজনীয় সকল তথ্য, উপাত্ত, চিত্র এমনভাবে সন্নিবেশিত রয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীরা কোন কিছু মুখস্থ না করে দেখে দেখে শিখে ফেলবে। এর লক্ষ্য হচ্ছে জ্ঞানার্জনের বিষয়টি সহজতর করা, জ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সাথে শৈশবেই শিক্ষার্থীদের পরিচিত করে তোলা, পছন্দে বিষয়ে আগ্রহী করে তোলা, ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার গঠনে লক্ষ্য স্থির করতে এবং তা অর্জনে সহযোগিতা করা। সর্বোপরি এর মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শিখবে এবং পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির জন্য ইতিবাচক কিছু করার অনুপ্রেরণা পাবে। এটি শুধু আনন্দ পাঠশালার শিক্ষার্থীদের জন্য সীমাবদ্ধ নয়, ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এটি পরিদর্শনে আসছে, নোট করে নিয়ে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালায় নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে পড়াশোনা চলছে।সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন ব্যবহারিক ক্লাস করছে, যেখানে দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিকের এপার্টাস ঠিকভাবে চেনার সুযোগও পায় না।
শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো প্রতিষ্ঠানটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আরেকটি বিষয় হলো, দেশে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই ক্লাস রোল নম্বর ঠিক করা হয়ে থাকে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা বছরের শেষ দিকে এসে পড়াশোনায় মনোযোগী অনেকটা বাধ্য হয়ে। সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালায় বার্ষিক, সাময়িক ও মডেল টেস্টসমূহের ফলাফল থেকে নির্ধারিত হারে নাম্বার যোগ করে তারপর রোল নম্বর ঘোষণা দিয়ে থাকে। মাসিক, সাময়িক, মডেল টেস্ট, বা্র্ষিক সকল পরীক্ষার ফলাফলে আনুষ্ঠানিক পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা আছে। পুরো বছর জুড়ে প্রতিযোগিতামূলক একটি পরিবেশে পাঠদানের সুযোগ হয়ে থাকে।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার জন্য তাদের লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি স্কুল নির্ধারিত বোর্ডে প্রকাশ করার সুযোগ রয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে নতুন নতুন অর্জিত নতুন নতুন অভিজ্ঞতার আলোকে সবসময় সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আপগ্রেড রাখার চেষ্টা করা হয়। করোনা মহামারীর আঘাত শুরু হওয়ার সাথে সাথে সাধারণ শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ গেলেও সরকারি ঘোষণার আগেই মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা প্রথমে মোবাইলে পড়া দেয়া-নেয়া, পরে ইমুতে গ্রুপ কার্যক্রম, এরপর গুগল ক্লাসরুমের মাধ্যমে তথা অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনলাইনে ক্লাস কখনো শ্রেণিকার্যক্রমের বিকল্প নয়। এজন্য দফায় দফায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর বাড়িতে শিক্ষকদের হোমভিজিট চলছে।
সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালা একাই সন্দ্বীপের শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে পারবে না। তবে আমরা একথা দাবী করতে পারি, সন্দ্বীপ আনন্দ পাঠশালার এ সকল তৎপরতার কারণে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও প্রতিযোগিতামূলক একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এটা আমাদের একটি বড় অর্জন। দ্বিতীয় বিষয় হলো আমাদের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে আপত্তি করে না, কারণ স্কুলকে তারা কোন চাপের জায়গা মনে করে না। বরং বন্ধ যদি একটু দীর্ঘ হয়, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থী উভয় পক্ষ অস্বস্তি বোধ করতে থাকে। শিক্ষকদের অবস্থাও এর ব্যতিক্রম নয়।
Leave a Reply